মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : আমার বাবা আমায় ছেড়ে চলে যেতে পারে না। দু’মাস পরেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল বাবার। বিদেশ থেকে কতকিছু আনার কথা ছিল সবার জন্য। কত ভালোবাসতো বাবা। গত কয়েকদিন আগেও বাবার সাথে কথা হয়েছিল তার। এসএসসি পরীক্ষার পর তাকে নিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল। তা আর হলো না রিমির। কথাগুলো কেঁদে কেঁদে বলছিল মালিতে শান্তিরক্ষী মিশনে দায়িত্বরত বাংলাদেশের চার জন সেনা সদস্যের একজন ল্যান্স কর্পোরাল আকতার হোসেনের মেয়ে রিমি।
নিহত ল্যান্স কর্পোরাল আক্তার হোসেনের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল ইউনিয়নের বরালিদাহ গ্রামে। তিনি বরালিদাহ গ্রামের আবু তালেব মোল্যার ছেলে। শুক্রবার সকালে গ্রামের বাড়ি বরালিদাহ গিয়ে দেখা গেছে শোকে নিঃস্তব্ধ আকতার হোসেনের পরিবার ও এলাকাবাসী।
স্বামীর মৃত্যুতে বার বার বাকরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে স্ত্রী মুসলিমা আক্তার রেণু। তার পিতা তালেব মোল্যা পুত্রশোকে নির্বাক হয়ে বসে আছেন রান্না ঘরের বারান্দায়। ৬ বছরের ছোট মেয়ে জান্নাতুল সকলের মুখের দিকে তাকিয়ে নিষ্প্রাণ। পাড়া প্রতিবেশি অনেকেই বাড়ির উপর বসে আছে মলিন মুখে। আত্মীয় স্বজনের মধ্যে অনেকেই এসে পৌঁছে গেছে খবর শোনার পর থেকেই। কেউ কেউ উচ্চস্বরে কাঁদতে কাঁদতে আসছে বাড়ির উপর। কেউ কেউ সমবেদনা জানাচ্ছেন শোকে বিহবল গোটা পরিবারকে। সবকিছু মিলিয়ে এ এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা।
আকতার হোসেনের স্ত্রীর বড়ভাই শহিদুল ইসলাম জানান, কৃষিজীবী তালেব মোল্যা অনেক কষ্ট আকতার হোসেনকে সেনাবাহিনীতে চাকুরি দেন। সুখেই চলছিল তাদের সংসার। তার এই আকস্মিক মৃত্যুতে তার পরিবারের যে ক্ষতি হলো তা পুরণ হবার নয়।
আনুমানিক ২০ বছর পূর্বে একই উপজেলার নলখোলা গ্রামের মৃত কওছার বিশ্বাসের মেয়ে মুসলিমা আক্তার রেণুকে বিয়ে করেন। তার দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে রিমি খাতুন এ বছর নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পরীক্ষা দিচ্ছে। ছোট মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া।