মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : মাগুরায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিশু শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। শহরমুখি প্রবনতার কারণে সেখানকার শিক্ষকরা বিভাগীয় কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে শহরের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে যোগদান করায় গ্রামের প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে শিক্ষকের চরম সংকট। কোথায় কোথায় মাত্র একজন বা দুইজন শিক্ষক দিয়েও চালানো হচ্ছে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া।
মাগুরার সদর উপজেলার চেঙ্গারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০০৫ সালে এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবসর নেওয়ার পর আর নিযোগ হয়নি নতুন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়টির অনুমোদিত বাকি চারজন শিক্ষকের একজন মাতৃকালিন ছুটি এবং দুইজন ডেপুটেশনে বাড়ির কাছের অন্য বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। এতে ওই বিদ্যালয়ের একমাত্র শিক্ষিকা বিভারানী রায় যেমন বিপাকে পড়েছেন। বিদ্যালয়ের ঘন্টা পেটানো থেকে শুরু করে পতাকা উত্তোলন সবই করতে হচ্ছে একা। এতে করে সেখানকার শিক্ষা কার্যক্রমে চলছে নিদারুন সংকটাবস্থা। একই অবস্থা একই উপজেলার রামদেরগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও। সেখানকার দুইজন শিক্ষকের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দাপ্তরিক কাজে বাইরে গেলে শতশত শিক্ষার্থি নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় একমাত্র শিক্ষিকা ঝরণা খাতুনকে।
এদিকে শহর এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাহিদার অতিরিক্ত শিক্ষক ডেপুটেশনে যোগ দেওয়ায় তাদের বসেই সময় কাটছে অনেকের। যে কারণে অপরিকল্পিত ডেপুটেশন বাতিল করে শিক্ষক সমন্বয়ের দাবি সংশ্লিষ্টদের।
এ বিষয়ে মাগুরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কুমারেশ চন্দ্র গাছি’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেপুটেশনে নানা অনিয়মের কথা স্বীকার করে অবিলম্বে শিক্ষক সমন্বয়ের আশ্বাস দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মাগুরা জেলায় মোট ৫০৩ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুমোদিত সহকারি শিক্ষকের সংখ্যা ২৫২৩টি। আর শূণ্য রয়েছে মাত্র ৯৭টি। অথচ ডেপুটেশনে মাগুরা সদরসহ অন্যান্য উপজেলা সদরের স্কুল গুলোতে অন্তত দেড়শতাধিক শিক্ষক ডেপুটেশনে রয়েছেন দীর্ঘদিন। অপরিকল্পিত এই ডেপুটেশন বাতিল করে শিক্ষক সমন্বয় করা গেলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ভেঙ্গেপড়া শিক্ষা কার্যক্রম সচল হবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।