মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : অভিভাবকদের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত মাগুরা সরকারি বালক বিদ্যালয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হলো কোচিং শিক্ষা। একই সাথে বিদ্যালয়টির শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শৃঙ্খলা রক্ষায় বিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শ্রেণী কক্ষসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ সিসি ক্যামেরায় আনার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। নিরুত্সাহিত করা হয় সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থির বাড়িতে অভিভাবকদের জি-বাংলা, স্টার জলসা দেখার ক্ষেত্রেও।
শনিবার মাগুরা সরকারি বালক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার মান ও শৃঙ্খলা উন্নয়ন বিষয়ক অভিভাবক সমাবেশে উপস্থিত সহস্রাধিক অভিভাবক, শিক্ষার্থি এবং সুধিজনদের উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে এসব সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
মাগুরা সরকারি বালিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জিয়াউল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অভিভাবক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মুহ. আতিকুর রহমান।
অভিভাবকদের স্বত:স্ফুর্ত উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাগুরা পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুণ্ডু, জেলা শিক্ষা অফিসার রণজিত কুমার মজুমদারসহ আরো অনেকে। অভিভাবকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাশারুল হায়দার বাচ্চু, সনিয়া খাতুন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান বিদ্যালয়ের নানা অসংগতির বিষয়ে শিক্ষার্থিদের লিখিত প্রস্তাবনা শিক্ষকদের সামনে উপস্থাপন করেন। একই সঙ্গে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শৃঙ্খলা রক্ষার্থে উপস্থিত অভিভাবকদের প্রস্তাবনাসমূহ উপস্থাপন করেন। এ সময় সর্ব সম্মতিক্রমে বিদ্যালয়ে এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোচিং শিক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। সেই সাথে বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষার আগে প্রয়োজনবোধে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। অন্যদিকে বিদ্যালয়টির অতিতের মডেল স্বীকৃতির ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ক্লাসে সাপ্তাহিক পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রধান অতিথি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থিদের মোবাইল ফোন ব্যবহারে কড়াকড়ি নিষেধাজ্ঞা, বিনা নোটিশেই শিক্ষার্থিদের বাড়ি পরিদর্শন, পাঠের প্রতি শিক্ষার্থির মনোযোগী করে তোলার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া এবং সন্তানের প্রতি অধিক যত্নশীল ও সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থির বাড়িতে জি-বাংলা, স্টার জলসাসহ অপরিহার্য নয় এমন সব চ্যানেল বন্ধ রেখে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে অভিভাবকদের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তাদের নিরুত্সাহিত করেন।
মাগুরার অন্যতম এই বিদ্যাপীঠকে একটি সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে প্রতি দুইমাস অন্তর অভিভাবক সমাবেশ আয়োজন এবং বিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম মনিটরিংয়ের সিদ্ধান্তও গৃহিত হয়।